পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের সানদেউলি গ্রামে যেন সভ্যতার মুখে সপাটে চড় (Bengal Road)। প্রবল বর্ষায় কাদা আর গর্তে ভরা রাস্তায় হাঁটাও যেখানে দুঃসাধ্য, সেখানে এক অসুস্থ বৃদ্ধাকে হাসপাতাল পর্যন্ত কাঁধে ঝোলায় ঝুলিয়ে নিয়ে যেতে হল। মানবিকতার করুণ ছবি ধরা পড়ল নারায়ণগড় ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় (Bengal Road)।
৬৫ বছরের সরস্বতী সামট, দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত। আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়তেই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হত তাঁকে (Bengal Road)। কিন্তু গ্রামের প্রধান রাস্তাটি এতটাই বেহাল যে সেখানে গাড়ি তো দূরস্থান, সাইকেল বা বাইকও চলাচল করতে পারে না। বাধ্য হয়েই কাঁধে ঝোলায় বেঁধে তাঁকে নিয়ে যেতে হয় প্রায় ৭০০ মিটার কাদা-পিচ্ছিল রাস্তা পেরিয়ে মূল সড়কে। তারপর শুরু হয় চিকিৎসার লড়াই (Bengal Road)।
এ যেন আদতে শুধু একজন বৃদ্ধার দুর্ভোগ নয়—এই ছবি গোটা সানদেউলি গ্রামের দীর্ঘ দিনের যন্ত্রণার প্রতীক। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষা এলেই এই রাস্তায় চলাচল কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। অথচ, এই পথই গ্রামের একমাত্র প্রবেশদ্বার। প্রতি বর্ষায় কেউ অসুস্থ হলেই কাঁধে তুলে, বাঁশে বেঁধে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নান্টু পুইলা ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, “গ্রামে আমরা প্রায় ২৫টি পরিবার থাকি। সকলেই তফসিলি জাতির। প্রশাসনের কাছে বহুবার দরবার করেছি। জেলা শাসক, বিডিও, এসডিও, এমনকি পঞ্চায়েত প্রধানকেও জানিয়েছি। ই-মেল করে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। রাস্তার এমন হাল যে বাইক তো দূরে থাক, সাইকেলও ঢুকতে পারে না। একজন অসুস্থ হলে তাঁকে কাঁধে নিয়েই বেরোতে হয়। আমরা কি মানুষ নই?”
প্রশাসনের নীরবতা এবং অবহেলায় ক্ষুব্ধ গোটা গ্রাম। বারবার জানানো সত্ত্বেও রাস্তার উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ হয়নি। পাকা রাস্তার স্বপ্ন দেখিয়ে ভোট এলেও, বর্ষা নামলেই সেই স্বপ্ন ডুবে যায় কাদা আর গর্তে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন—এই দুর্দশার দায় নেবে কে?