সোফার ভেতরে বসে ছিল গাঁজা! রাস্তার উপর দিয়ে চলতে থাকা একদম ‘নিরীহ’ দেখতে আসবাবপত্র বোঝাই ট্রাক থামাতেই চোখ কপালে উঠল ব্যারাকপুর পুলিশের (Barrackpur)। ভরা বাজারের মাঝে সোফা ভেঙেই বেরিয়ে এল ৫৩ কেজি গাঁজা! ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর (Barrackpur) এলাকায়। এই ঘটনাই ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কীভাবে আসবাবপত্রের আড়ালে দিব্যি চলছে মাদক পাচারের নেটওয়ার্ক—আর তাতে যুক্ত রয়েছে আন্তঃরাজ্য চক্র।
ঘটনার সূত্রপাত এক গোপন খবরে। ব্যারাকপুর (Barrackpur) পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে আগেই খবর আসে, এক চালানে সোফার ভেতর লুকিয়ে পাচার করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ গাঁজা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে শুরু হয় নজরদারি। সোমবার নাগেরবাজার থেকে ব্যারাকপুরের (Barrackpur) দিকে আসা একটি ট্রাককে শনাক্ত করে পুলিশ। ট্রাকটিতে তোলা ছিল কিছু সোফা ও চেয়ার—একদম সাধারণ আসবাবপত্র। কিন্তু ভিতরের গল্পটা ছিল একেবারেই অন্যরকম।
ব্যারাকপুরের (Barrackpur) রাস্তায় ট্রাক থামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। সোফাগুলো খুলতেই বেরিয়ে আসে বাক্সভর্তি গাঁজা। চমকে ওঠেন পুলিশ আধিকারিকরাও। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয় ৫৩ কেজিরও বেশি গাঁজা। ট্রাকচালক ও যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে দুই মূলচক্রীর নাম—একজন বিহারের বাসিন্দা সুব্রত দে এবং অপরজন নদিয়ার চাকদহের বাসিন্দা সুরোজিৎ বিশ্বাস।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরেই আসবাবপত্র তৈরির সময় তার ভেতরে মাদক লুকিয়ে পাচারের কাজ করে আসছিল। সোফা বা চেয়ার বানানোর সময় কাঠ ও কাপড়ের স্তরের ভেতরে ফাঁকা জায়গায় ঢুকিয়ে দেওয়া হতো মাদক। এরপর সেই আসবাব পাঠানো হতো নির্দিষ্ট জায়গায়, যেখানে পাচারকারীরাই ‘গ্রাহক’ সেজে তা গ্রহণ করত।
পুলিশ ইতিমধ্যেই এই আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের পর্দা ফাঁস করতে শুরু করেছে। খোঁজ চলছে আর কে কে যুক্ত রয়েছে এই গ্যাংয়ের সঙ্গে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, এই ঘটনায় বড় কোনও মাদক সিন্ডিকেট জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল—পথে দেখা প্রতিটি ট্রাকের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র!