চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আদায়, আর সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে রীতিমতো মরণাপন্ন মারধর! এমনই বিস্ফোরক অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর (Barrackpore) মহকুমার মোহনপুর থানা এলাকা। দুর্নীতির অভিযোগে এবার তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ও তাঁর ভাইয়ের নাম জড়াল। বৃদ্ধাকে আইসিইউতে পাঠানো এই ঘটনায় ফের রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে (Barrackpore)।
অভিযোগ উঠেছে, ব্যারাকপুরের (Barrackpore) শিউলি পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যা ফিরোজা বিবির স্বামী শাহিদুল গাজী এবং তাঁর ভাই বহিদুল গাজী দীর্ঘদিন ধরে এলাকার সাধারণ মানুষকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার কারবার চালাচ্ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শুধু চাকরির লোভ দেখিয়ে টাকা নেওয়াই নয়, প্রভাব খাটিয়ে এলাকার মানুষকে ভয় দেখানো, চমকানোও নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে (Barrackpore)।
সম্প্রতি এলাকার এক বয়স্ক মহিলা সমিরন বিবির কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা নেওয়া হয় তাঁর ছেলেকে চাকরি দেওয়ার নামে। কিন্তু দীর্ঘদিন কেটে গেলেও চাকরি মেলেনি। টাকা ফেরত চাইলে শাহিদুল ও তাঁর ভাই বৃদ্ধাকে নৃশংসভাবে মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই ঘটনার পর তীব্র চাপে পড়ে স্থানীয় মানুষ মোহনপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তৎপরতা দেখিয়ে শাহিদুল ও বহিদুল—দুই অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে। যদিও এলাকাবাসীর দাবি, এই গ্রেপ্তার যথেষ্ট নয়, আরও কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োজন।
শিউলি পঞ্চায়েত প্রধান অরুণ ঘোষও এই অভিযোগ অস্বীকার করেননি। বরং স্বীকার করে নিয়েছেন, “আগেও অনেকবার এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। আমরা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এখন আইনই চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই শাহিদুল এলাকায় তৃণমূলের পরিচয়ে দাদাগিরি করে বেড়াচ্ছেন। মহিলারাও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। কেউ মুখ খুললে ভয় দেখানো হয়, কারও পয়সা মেরে দেওয়া হয়, আবার কেউ প্রতিবাদ করলে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন।
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—তৃণমূল কীভাবে এমন নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে? চাকরির নামে টাকা নিয়ে একজন বৃদ্ধাকে মারধরের ঘটনা রীতিমতো নিন্দনীয় এবং ভয়াবহ। প্রশাসনের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া জনআস্থা ফিরিয়ে আনা অসম্ভব বলেই মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।