বারাসত (Barasat) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মৃতদেহ বের হতেই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। বছর চৌত্রিশের প্রীতম ঘোষের দেহ শেষকৃত্যের জন্য মর্গ থেকে বার করার সময় পরিবার দেখেন, তাঁর দুই চোখ নেই। শুধু তাই নয়, মুখের এক পাশে রাখা রয়েছে তুলসি পাতা (Barasat)। এই দৃশ্য দেখেই ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। প্রশ্ন উঠছে—চোখ গেল কোথায়? এটি কি অঙ্গ পাচারের ঘটনা, না কি অন্য কোনও ভয়াবহ অবহেলার ফল?
প্রীতম ঘোষ বারাসতের কাজীপাড়ার বাসিন্দা (Barasat)। মঙ্গলবার তাঁকে শেষবারের মতো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময়ই এই অস্বাভাবিক বিষয়টি সামনে আসে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে (Barasat)। পরিবারের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে মৃতের চোখ চুরি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা।
ঘটনাক্রমে সেই সময় যশহর রোড দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় যাচ্ছিল। বিক্ষোভের মাঝে পড়ে যায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় (Barasat)। পরিবার নিজেরাই পুরো ঘটনা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। তিনি দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন এবং বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
এর পরই হাসপাতালের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মর্গের পুরনো সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের সময় থেকে শুরু করে দেহ হস্তান্তরের আগের সমস্ত নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনার মধ্যে আরও চাঞ্চল্য ছড়ায় মর্গের এক কর্মীর বক্তব্যে। তাঁর দাবি, মর্গের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরেই ফ্রিজিং সিস্টেম খারাপ রয়েছে। ফলে দেহ ঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় না। সেই সুযোগেই নাকি মর্গে ঢুকে পড়ে অসংখ্য ইঁদুর। তাঁর মতে, অতীতেও ইঁদুর মৃতদেহের একাধিক অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ওই কর্মীর দাবি, প্রীতমের চোখও ইঁদুরে খুবলে খেতে পারে। তিনি আরও বলেন, দেহ বের করার আগেই এক ব্যক্তিকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল।
কিন্তু পরিবারের প্রশ্ন—মর্গের ভিতরে ইঁদুর ঢোকার সুযোগই বা কীভাবে হল? কেন এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ফ্রিজিং ব্যবস্থা বিকল? এত বড় গাফিলতি কীভাবে চলতে পারে? এই প্রশ্নেই ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা।
গোটা ঘটনায় চিকিৎসকদের একাংশও সরব। তাঁদের দাবি, রাজ্যের বহু হাসপাতালের মর্গে কুলিং সিস্টেম দীর্ঘদিন ধরে খারাপ পড়ে রয়েছে। যা ভয়াবহ অবহেলার পরিচয়।
এখন গোটা রাজ্য জুড়ে একটাই প্রশ্ন—বারাসতের মর্গে প্রীতম ঘোষের চোখ সত্যিই কি ইঁদুরে খেয়েছে, না কি এর পিছনে সক্রিয় কোনও অঙ্গ পাচার চক্র?












