রাজ্যের রাজনীতিতে বড়সড় চাঞ্চল্য তৈরি করেছে বাউরি কালচারাল বোর্ডের নেতৃত্বে রাতারাতি রদবদল (Bankura)। বিধানসভা ভোটের মাত্র দেড় বছর আগে বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বাঁকুড়ার দাপুটে তৃণমূল নেতা দেবদাস দাসকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পেলেন তৃণমূলের আরেক পরিচিত মুখ, পেশায় শিক্ষক দীপক দুলে (Bankura)। অপসারিত দেবদাস দাসকে যদিও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে। কিন্তু এত দ্রুত এই পরিবর্তনের পেছনে আসল কারণ কী? রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা, অন্তর্কলহে জর্জরিত বোর্ডেই এর মূলে লুকিয়ে আছে উত্তর (Bankura)।
রাজ্যের অন্যতম বড় জনজাতি বাউরি সম্প্রদায়—সংখ্যায় কয়েক লক্ষ। বাঁকুড়া v, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম এবং হুগলি জেলার প্রায় ৬৮টি বিধানসভা আসনে তাদের উল্লেখযোগ্য প্রভাব। ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী এই জনজাতিকে রাজনৈতিকভাবে কাছে টানতে ঘোষণা করেছিলেন বাউরি কালচারাল বোর্ড গঠনের। সেই সময়ই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান দেবদাস দাস। কিন্তু চার বছরের মাথায় আচমকাই বদল (Bankura)।
গতকাল বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান দীপক দুলের সংবর্ধনা সভা যেন বোর্ডের ভেতরের অশান্তির ছবিকে আরও স্পষ্ট করে দিল। মঞ্চ থেকে তিনি সরাসরি অপসারিত দেবদাস দাসকে উদ্দেশ করে বলেন, “সব রাগ-অভিমান ভুলে সমাজের জন্য কাজ করুন। আমার সঙ্গে হাত মেলান। অনেকেই আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করবে, কিন্তু আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী বিধানসভায় লড়াই করতে হবে। বাঁকুড়ার ১২টি আসনই জিততে হবে।” তাঁর দাবি, আন্তরিকতা ও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে বোর্ডের উদ্দেশ্য কিছুটা ব্যাহত হয়েছে, তবে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই ভুল শুধরে এগিয়ে যাবেন।
এ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি দেবদাস দাস। সংবর্ধনা সভায় দীপক দুলে বক্তব্য রাখার সময় তাঁকে নীরবে বসে থাকতে দেখা যায়।
অন্যদিকে, এই রদবদল নিয়ে শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, বোর্ডের উদ্দেশ্য শুধু সরকারি অর্থ লুটে খাওয়া। বিজেপির বাঁকুড়ার প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, “এই বোর্ড সমাজের জন্য কিছুই করেনি। এখন শুধু বাউরি ভোট নিজেদের দিকে টানতে মুখ বদল করেছে তৃণমূল। কিন্তু তাতে কিছুই হবে না, বাউরি সমাজ বিজেপির সঙ্গেই আছে।”
এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনীতির তাপমাত্রা দ্রুত চড়ছে, আর প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—ভোটের আগে এই হঠাৎ পদ পরিবর্তন কি তৃণমূলের কৌশল, নাকি বোর্ডের অন্তর্দ্বন্দ্বেরই ফল?