উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থেকে উঠে এল এক বিস্ফোরক অভিযোগ। জানা গেছে, বাংলাদেশের বাসিন্দা (Bangladeshi) এবং বিএনপি-র (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি) নেতা রেজাউল মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে ভারতে থেকে এক ভারতীয় নারীকে বিয়ে করে ভোটার কার্ড তৈরি করে ভোট দিয়েছেন। এমনকি অভিযোগ রয়েছে, তিনি (Bangladeshi) তার ভারতীয় শাশুড়িকে ‘মা’ সাজিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর হঠাৎই তিনি স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে বাংলাদেশে ফিরে যান (Bangladeshi) ।
এই ঘটনা সামনে আসে বাগদার বিডিও-র দফতরে এক গোপন অভিযোগ জমা পড়ার পর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে প্রশাসন। জানা যায়, বাগী গ্রামের বাসিন্দা শেরফুল মণ্ডলের সঙ্গে (Bangladeshi) প্রায় ৩০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল রেজাউলের। শুরুতে শেরফুল জানতেন না যে তার স্বামী বাংলাদেশের নাগরিক। বিয়ের পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় তিন সন্তান। কয়েক বছর আগে রেজাউল বাংলাদেশে চলে যান। পরে তাদের বড় ছেলে ফিরোজ মণ্ডলও বাবার সঙ্গে পাড়ি দেয় সীমান্ত পেরিয়ে।
বৃহস্পতিবার ছিল রেজাউলের ভোটার তালিকা সংশোধনের শুনানি। সেখানে তার স্ত্রী শেরফুল উপস্থিত হয়ে জানান, তাঁর স্বামী এবং ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, রেজাউল এবং ফিরোজের কোনও বৈধ ভারতীয় পরিচয়পত্র মেলেনি। বিডিও প্রসূন প্রামাণিক বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে শেরফুল মণ্ডলের দাবি, তিনি ও তাঁর সন্তানরা ভারতীয় নাগরিক এবং তাদের ভোট যেন বাতিল না হয়, তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান। তিনি বলেন, “স্বামী যে বাংলাদেশি, আমি জানতাম না। সে আমার মাকে ‘মা’ বানিয়ে ভোটার কার্ড করেছিল। এক-দেড় বছর আগে সে চলে যায় বাংলাদেশে। এরপর আমার বড় ছেলেও চলে যায়। এখন বিডিও সাহেব বলছেন ওদের ভোট কাটা হবে। কিন্তু আমরা তো ভারতীয়, আমাদের ভোট যেন কাটা না হয়।”
এই ঘটনার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও সামনে এসেছে। স্থানীয় তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের নেতা শাহদাদ মণ্ডল জানান, “রেজাউল মণ্ডল একজন বাংলাদেশি এবং বিএনপি নেতা ছিলেন। তিনি বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর স্ত্রী এবং সন্তান এ দেশের নাগরিক—তাদের রক্ষা করা হোক।”
অন্যদিকে বিজেপির বনগাঁ জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল কটাক্ষ করে বলেন, “বাংলাদেশি নেতার এখানে পাসপোর্টও হয়ে গেছে! আমরা মনে করি, পাসপোর্ট নিয়েই সে দেশ ছেড়েছে। আর এই ব্যক্তি তৃণমূলের ভোটার ছিল—এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশিরাও এ রাজ্যে ভোট দিয়ে যাচ্ছে।”
ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে আসায় ইতিমধ্যেই তদন্ত জোরদার করা হয়েছে এবং ভোটার তালিকা থেকে অবৈধ নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।