ভারতে বাংলাদেশি (Bangladeshi) অনুপ্রবেশ নতুন কিছু নয়। বহু বাংলাদেশি বছরের পর বছর ধরে এদেশে বেআইনি ভাবে এসে পরিচয়পত্র জোগাড় করে, ভোটার হয়, এমনকি সরকারি চাকরিতেও ঢুকে পড়ে। তবে এবার একেবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক!
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শান্ত ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের গেস্ট ফ্যাকাল্টি হিসেবে পড়াচ্ছিলেন। তবে সম্প্রতি জানা গিয়েছে, শান্ত ভৌমিক আদতে একজন বাংলাদেশি (Bangladeshi) নাগরিক। অভিযোগ, তিনি বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরেই তদন্ত শুরু করে। জানা গিয়েছে, শান্ত ভৌমিক নাম (Bangladeshi) পাল্টে পরিচয় দিয়েছেন ‘সায়ন ভৌমিক’ নামে। শিলিগুড়ির লেকটাউনে তিনি এক বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন এবং নিজেকে এখানকার নাগরিক হিসেবেই পরিচয় দিতেন। ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের মতো নথিও ছিল তাঁর কাছে। এলাকাবাসীরাও তাঁকে ভারতীয় নাগরিক বলেই জানতেন।
তবে যেই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে আসে, সেই মুহূর্তেই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ইমেল করে জানান, তিনি (Bangladeshi) আর চাকরিতে থাকবেন না। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন। এরপর থেকেই তিনি বেপাত্তা। ফোন বন্ধ, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সব ডিলিট করে ফেলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত জানান, তাঁরা পুলিশকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি জানিয়েছেন। শান্ত ভৌমিককে ৪৮ ঘণ্টার সময়ও দেওয়া হয়েছিল দেখা করার জন্য, কিন্তু তিনি আসেননি। বরং ইমেল করে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান।

এই ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর ও শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও। তিনি বলেন, এই ঘটনা আগে তাঁর জানা ছিল না। কিন্তু একজন বাংলাদেশি কীভাবে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড পেলেন, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান।
লেকটাউন ওয়ার্ড অফিসের তরফে বলা হয়েছে, শান্ত ভৌমিক নামে কোনও রেকর্ড নেই। তিনি নিজের নাম দিয়েছিলেন ‘সায়ন ভৌমিক’।
বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটা স্পষ্টভাবে অনুপ্রবেশকারীদের বাংলাদেশ থেকে এনে ভারতীয় বানানোর বড় ষড়যন্ত্র। শুধু শান্ত নন, আরও অনেকেই এইভাবে বাংলাদেশ থেকে এসে পরিচয়পত্র জোগাড় করে বিভিন্ন সরকারি পদে ঢুকে পড়ছেন।
এই ঘটনা সামনে আসার পর প্রশাসনের একাংশও চিন্তিত। কারণ একজন অনুপ্রবেশকারী এত দূর পর্যন্ত কীভাবে পৌঁছল, তা খতিয়ে দেখা দরকার।