বর্ষা নামলেই ফের উন্মোচিত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বহু গ্রামের চরম অব্যবস্থার চিত্র (Bad Road)। কলকাতা থেকে শুরু করে জেলার ভিতরে ভিতরে—চেনা ছবি: রাস্তা বেহাল, খানাখন্দে ভরা, হাঁটু জল আর কাদা যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। হুগলির আরামবাগ মহকুমার মলয়পুর ২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পূর্ব কেশবপুর গ্রামে চিত্র আরও ভয়াবহ (Bad Road)। এক হাঁটু কাদা আর দুর্গম রাস্তা মাড়িয়ে স্কুলে যাচ্ছে শিশুরা, গ্রামের মানুষের জন্য এই রাস্তা যেন প্রতিদিনের লড়াইয়ের নতুন চ্যালেঞ্জ।
গ্রামের বাসিন্দা মানা হাজরা আক্ষেপ করে বলেন, “টানা দু’মাস ধরে বৃষ্টি। আর এই রাস্তা আমাদের মেইন রাস্তা। শরীর খারাপ হলে বেরনো যায় না (Bad Road)। পার্টির লোক আমাদের খবর রাখে না। ওদের বাড়ি, গলি সব পাকা। আমরা আছি উপেক্ষিত।” আর এক গ্রামবাসী কাতর অনুরোধ করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, এই রাস্তা করে দিন। স্কুলে ছেলেটা যেতে পারে না, আমি কাজেও বেরোতে পারি না। জরুরি অবস্থায় প্রসূতিদের হাসপাতালে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে এই রাস্তার জন্য।”
রিনা সাঁতরা নামে এক মহিলা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন (Bad Road), “ছ’বছর হয়ে গেল, রাস্তা নেই। শুধু বলে হবে, কিন্তু কিছুই হয় না। দিদি আমাদের সাইকেল দিয়েছেন, কিন্তু রাস্তাই নেই—সাইকেল নিয়ে যাব কোথায়?”
এই চিত্র দেখে সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেকেই। এমনকি ১০২ অ্যাম্বুলেন্সও ওই গ্রামে ঢুকতে চায় না। নাম শুনেই ফিরে যায় জরুরি পরিষেবা। গ্রামবাসীদের মতে, ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি মেলে, কিন্তু বর্ষা এলেই বোঝা যায়, উন্নয়ন আসলে কতটা ভঙ্গুর।
যদিও রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আপনারা বাংলার ভিতরে গিয়ে দেখলে বুঝবেন, আগে যেখানে কাদা মাড়িয়ে যেতে হত সেখানে এখন ঢালাই রাস্তা হয়েছে। পিচের রাস্তা তো একটু ভাঙবেই, কারণ জলের সঙ্গে তার শত্রুতা। কিছু সমস্যা থাকলেও এই সরকারই তা ঠিক করবে।”
তবে পূর্ব কেশবপুরের হাজরাপাড়া এবং বাউরিপাড়ার মানুষ এখন আর আশ্বাসে বিশ্বাস করছেন না। তাঁরা বলছেন, প্রতিবারই রাস্তা নিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতি শোনা যায়, কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—রাস্তাহীন এই জীবন আর কতকাল চলবে? উন্নয়নের গল্প কি শুধুই পোস্টার আর বক্তৃতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ?
“রাস্তাই নেই, তবু ভোট চাই! স্কুলপথে কাদা, অ্যাম্বুলেন্স ঢোকে না—আরামবাগে বেহাল রাস্তায় বিপন্ন ২ হাজারেরও বেশি মানুষের জীবন!”