অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হলেন খড়গপুর কাণ্ডে অভিযুক্ত বেবি কোলে (Baby Koley)। মেদিনীপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে এই সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। দলীয় রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশের পরেই এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তিনি (Baby Koley)।
গত ৩০ জুন খড়গপুর শহরের রাস্তায় প্রবীণ বামনেতা অনিল দাসকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন বেবি কোলে (Baby Koley)। সেই সময়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়, যেখানে দেখা যায় বেবি কোলে-সহ আরও তিনজন মহিলা অনিল দাসকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করছেন। ঘটনার সময়েই ওই বাম নেতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, যা রাজনৈতিকভাবে আরও বিতর্ক তৈরি করে (Baby Koley)।
তৃণমূলের তরফে খড়গপুর থানায় বেবির (Baby Koley) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা তাঁকে শোকজ নোটিশ পাঠান। নিজের সাফাইয়ে বেবি দাবি করেন, আত্মরক্ষার তাগিদেই তিনি হাত তুলেছিলেন। কিন্তু দল তাঁর সেই যুক্তি মানতে নারাজ। জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, “বেবি কোলে আমাদের দলের কর্মী হলেও, তাঁর আচরণ একেবারেই অনভিপ্রেত। একজন বয়স্ক বাম নেতার প্রতি যে দুর্ব্যবহার তিনি করেছেন, তা দল মেনে নিতে পারে না। তাই রাজ্য সভাপতির নির্দেশে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল।”
এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন, “এটা কোনও ব্যবস্থা নয়। ঘটনার ১৫ দিন কেটে গেল, কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল না, দলও তখন চুপচাপ ছিল। আসলে খড়গপুরবাসীর তীব্র প্রতিক্রিয়ায় চাপে পড়ে তৃণমূল বাধ্য হয়েছে কাঁধ ঝেড়ে ফেলতে।”
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার প্রকাশ্যে বার্তা দিয়েছেন যে, দলের মধ্যে কোনওরকম অন্যায়, বিশৃঙ্খলা বা দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। একাধিক দলীয় মিটিংয়েও তাঁরা শৃঙ্খলার প্রশ্নে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। সেই বার্তার প্রতিফলন হিসেবেই দেখা হচ্ছে বেবি কোলের (Baby Koley) বহিষ্কারকে।
তবে এই বহিষ্কার নিয়েও প্রশ্ন উঠছে—যে অপরাধের ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা এতদিন কোথায় ছিল? দল কেন এতদিন চুপ ছিল? রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিল এই সিদ্ধান্ত।