দীর্ঘ দেড় বছর তিহাড় জেলের অন্ধকার ঘরে কাটিয়ে অবশেষে মঞ্চে ফিরলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। আর ফিরে এসেই যেন ফের আগের মতো ঝাঁঝে ভরপুর কেষ্ট। সোমবার বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের যশপুর গ্রামে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায় চৌধুরী সহ জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব।
মঞ্চে উঠে অনুব্রতর (Anubrata Mondal) আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। বললেন, “গত লোকসভা নির্বাচনে দুবরাজপুরের ১০টা এলাকা থেকে আমরা ২৬ হাজার লিড পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার আমার অনুরোধ— এই ১০টা অঞ্চল থেকে যেন অন্তত ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার ভোটে তৃণমূল এগিয়ে থাকে। এই ব্যালট বাক্সের মাধ্যমেই বিজেপিকে শিক্ষা দেব। ছাব্বিশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার মুখ্যমন্ত্রী করব।”
কেষ্টের (Anubrata Mondal) দাবি, গত লোকসভা ভোটে নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মাত্র ১৩ দিনের প্রচারে তৃণমূল এমন সাড়া পেয়েছিল, যা এবারে আরও দ্বিগুণ হবে। তাঁর কথায়, “গতবার সময় কম ছিল। তবুও মানুষ আমাদের পাশে ছিলেন। এবার মা-বোনেরা আমাদের আরও বড়ো ভোটে জিতিয়ে দেবেন।”
দুবরাজপুরের বিজয়া মঞ্চে এদিন ছিলেন বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মঞ্চে উঠে একের পর এক তীর ছুঁড়লেন বিজেপির দিকে। কটাক্ষ করে বললেন, “বিজেপির মাথায় যত চুল নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প তত বেশি!” এরপরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও নিশানা করে বলেন, “মুসলিম পরিবারে যেমন মীরজাফর নামে কেউ সন্তান জন্মায় না, তেমনি হিন্দু পরিবারেও এখন শুভেন্দু নামে কেউ সন্তান রাখে না।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বছরের তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী গুলো শুধু উৎসব নয়— এগুলিই আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের পূর্বাভাস। প্রতিটি জেলার মঞ্চ থেকেই বাজবে ভোটের বাদ্যি। সূত্রের খবর, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচির দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন, এমনকি কালীপুজো পর্যন্ত সমস্ত সম্মিলনী শেষ করার নির্দেশও দিয়েছেন।
বীরভূমের এই সভার পর স্পষ্ট, জেল ফেরত অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) আবারও সক্রিয় রাজনীতির কেন্দ্রে। আর তাঁর কণ্ঠেই শুরু হল তৃণমূলের ২০২৬-এর নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রথম ঢাক।