পাঁচ দিনের ‘বেড রেস্ট’ শেষ হওয়ার পর অবশেষে হাজিরা দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বোলপুর থানার আইসি লিটন দাসকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আগেই এফআইআর দায়ের হয়েছিল। একাধিকবার হাজিরা নোটিস পাঠানো হলেও, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তা এড়িয়ে যান অনুব্রত (Anubrata Mondal)। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি অবশেষে পৌঁছান শান্তিনিকেতনের এসডিপিও অফিসে।
উল্লেখ্য, অনুব্রতর (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে শুধু হুমকি নয়, আরও বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ— হুমকি, দুর্ব্যবহার, এমনকি যৌন হেনস্থার মতো অভিযোগও। এই অভিযোগে গ্রেফতারি হতে পারে কি না, তা নিয়েও জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।
যা ঘটনার সূত্রপাত, তা হল— থানার আইসি-কে হুমকির একটি অডিয়ো ক্লিপ সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে (Anubrata Mondal)। সেই ক্লিপে অনুব্রত মণ্ডলকে রীতিমতো কদর্য ভাষায় আইসি-কে হুমকি দিতে শোনা যায়। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর তৃণমূল নেতৃত্বও অস্বস্তিতে পড়ে। দলের পক্ষ থেকে অনুব্রতকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি লিখে ক্ষমাও চান।
কিন্তু এরপরও বারবার হাজিরার নির্দেশ এড়িয়ে যান অনুব্রত। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার ‘সার্টিফিকেট’ সামনে এলেও, বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে— তিনি কি পুরনো দাপট দেখিয়ে পুলিশের নির্দেশ মানছেন না?
এই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতন থানার চত্বরে কড়া নিরাপত্তা রাখা হয়। রাজ্য পুলিশের র্যাফ মোতায়েন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ একটি সাধারণ গাড়িতে চেপে থানায় আসেন অনুব্রত মণ্ডল। সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের মাঝেই তিনি সোজা চলে যান এসডিপিও অফিসে।
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিরোধী বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, “এই পাঁচদিনে কী কী হয়েছে? তৃণমূল নেতৃত্ব কি কোনও আশ্বাস দিয়েছে?” অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর মন্তব্য, “এটাই তো প্রমাণ করে আইনের শাসন আছে। একজন তৃণমূলের দাপুটে নেতার বিরুদ্ধেও এফআইআর হয়েছে।”
এখন দেখার বিষয়, অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্ত কোন পথে এগোয়। তাঁকে গ্রেফতার করা হবে কি না, তা নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পুলিশের উপরেই নির্ভর করছে।