জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে একের পর এক রহস্য ঘিরে উত্তেজনা চরমে। সরকারি অফিসের ঠিক পিছনে, ঘন জঙ্গলের ভেতর থেকে উদ্ধার হলো প্রচুর বৈধ ভোটার কার্ড (Voter Cards)! কে বা কারা ফেলে দিল এই কার্ডগুলো? ভুলবশত, না কি কোনও বড় কারচুপি লুকিয়ে আছে এর পেছনে?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকালে অফিস সংলগ্ন পথে চলাচলের সময় তারা ঝোপের ভেতর কাগজের গাদা দেখতে পান। কাছে গিয়ে দেখা যায়—সবকটাই ভোটার কার্ড (Voter Cards)! খবর পেয়ে এলাকায় ভিড় জমে যায়। প্রশাসনের তরফে কার্ডগুলো উদ্ধার করে পরীক্ষা করা হয়। চমকপ্রদ তথ্য সামনে আসে—সব কার্ডের এপিক নম্বর একেবারেই বৈধ! নামও মিলে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে (Voter Cards)।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে—বৈধ ভোটার কার্ড জঙ্গলে এল কীভাবে? সরকারি অফিসের এত কাছেই যদি শত শত কার্ড পড়ে থাকে, তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে (Voter Cards)।
এক অফিসকর্মী দাবি করেছেন, “অফিস পরিষ্কারের সময় অনেক পুরনো কাগজপত্র ফেলা হয়েছে।” কিন্তু যদি তাই হয়, তাহলে ‘পুরনো কাগজপত্র’-এর সঙ্গে বৈধ ভোটার কার্ড ফেলা হল কেন? এবং কে ফেলার নির্দেশ দিল?
বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছে বিডিও প্রশান্ত বর্মনকে ঘিরে বিতর্ক। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রয়েছে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের মামলা। এমন বিতর্কিত এক প্রশাসনিক আধিকারিকের এলাকায় এই ঘটনা ঘটায়, রাজগঞ্জে এখন চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা।
তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বারবার বলেছি, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। হয়তো পুরনো কার্ডগুলির জায়গায় নতুন কার্ড তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেটা যদি অফিসের মাধ্যমে ফেলা হয়, তবে তা তদন্তের দায়িত্ব কমিশনের।”
অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাজগঞ্জের এই বিডিও চুরির নম্বরে চলে। যেখানে যান, সেখানেই বিতর্ক। এবার ভোটার কার্ড কাণ্ডে প্রশাসনের দুর্নীতির মুখোশ খুলে গেল।”
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ভোটার কার্ড জঙ্গলে পাওয়া যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ‘ভোটার ডেটা সিকিউরিটি’ নিয়ে প্রশ্নে চাপে পড়েছে নির্বাচন কমিশন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ঘটনা শুধুই প্রশাসনিক অবহেলা নয়, বরং নির্বাচনের আগে ‘ভোট কারচুপির সম্ভাবনা’ নিয়ে নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে।













