নদিয়ায় (Nadia) ফের ধরা পড়ল ১০ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। সীমান্তে কড়া নজরদারি থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করছে বাংলাদেশি নাগরিকরা। এবার গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে ধানতলা থানার পুলিশ (Nadia) কুলগাছি গ্রাম থেকে এই ১০ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচজন মহিলা ও পাঁচজন পুরুষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হলেন— ফারজানা মোল্লা, নাজমিন মোল্লা, আদারি মোল্লা, রিক্তা মোল্লা, সাথী মোল্লা, রাবিয়া মোল্লা, শামিম মোল্লা, মুরাদ মোল্লা, ইকবাল মোল্লা এবং আজম মোল্লা। এরা সকলেই এক বছর আগে দালালের মাধ্যমে মোটা টাকা দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে গুজরাটে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে কিছুদিন আগেই তারা নদিয়ায় (Nadia) চলে আসে এবং ফের বাংলাদেশে ফিরে যেতে চেয়েছিল। তবে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় পুলিশের হস্তক্ষেপে (Nadia) ।
গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, কুলগাছি গ্রামে লুকিয়ে রয়েছে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। দ্রুত তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পুলিশ সকলকে আটক করে। ধৃতদের কাছ থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পাওয়া যায়নি। তাই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে, এদের মধ্যে কেউ নাশকতার পরিকল্পনায় যুক্ত কিনা, তা জানতে চলছে জেরা।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এই অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে প্রবেশে দালালদের বড় ভূমিকা রয়েছে। ওই দালালদের খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে তাদের রানাঘাট আদালতে পেশ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সীমান্ত থানাগুলিকে অনুপ্রবেশ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি পুলিশকে স্পষ্ট বলেছেন, অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে কোনও রকম গাফিলতি সহ্য করা হবে না। সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানোর কথাও বলেছেন তিনি।
এই নির্দেশের পর রাজ্যজুড়ে পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে। ইতিমধ্যে নদিয়া জেলা থেকে প্রায় ৪৯০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
তবে প্রশ্ন উঠছে, দফায় দফায় ধরা পড়লেও থামছে না অনুপ্রবেশ। কোথাও না কোথাও ভেঙে পড়ছে সীমান্ত নিরাপত্তা। দালালচক্রও রমরমিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু জীবিকা নয়, এমন প্রবেশের আড়ালে কোনও বড় ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে কি না, তা নিয়েও তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ছে। সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীদেরও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, অনেক সময়েই অনুপ্রবেশকারীরা স্থানীয়দের পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকছে, যা ভবিষ্যতে বড় বিপদের ইঙ্গিত হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছে গোয়েন্দারা।