নদিয়ার কৃষ্ণনগরে চুরি সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি (Mob Lynching) দেওয়ার ঘটনা ঘিরে ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। অভিযোগ, এলাকার একটি বাড়িতে ঢুকে মোবাইল ফোন চুরি করার চেষ্টা করছিল এক ব্যক্তি। বাড়ির লোকজন ও আশপাশের বাসিন্দারা তাঁকে ধরে ফেলে v। এরপর কোনও কথা না শুনেই রাস্তায় বেঁধে শুরু হয় বেধড়ক মারধর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বাড়ির ভেতর ঢুকে কিছু খোঁজাখুঁজি করছিলেন। তখনই বাড়ির এক সদস্য তাঁকে দেখতে পান। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে ধরে ফেলেন। এরপর রশি দিয়ে বেঁধে চলে একাধিক জনের পিটুনি (Mob Lynching)।
তীব্র মারধরের জেরে রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকেন ওই ব্যক্তি (Mob Lynching)। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু মানুষ ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে, কেউ কেউ মোবাইলে ভিডিও তুলছে, আর অভিযুক্ত ব্যক্তি মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন। এই ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এমন প্রকাশ্যে আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা কি আদৌ গ্রহণযোগ্য (Mob Lynching)?
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে এবং মোবাইল চুরির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে একইসঙ্গে গণপিটুনির ঘটনারও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। কোতোয়ালি থানার পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি পৃথক মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
আইনজ্ঞ এবং মানবাধিকার কর্মীদের একাংশ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁদের মতে, চুরি করে থাকলেও সেটার বিচার করার অধিকার কেবলমাত্র আদালতের, জনতার নয়। অন্যদিকে, স্থানীয়দের একাংশ বলছেন, বারবার এলাকায় চুরি হলেও প্রশাসনের তরফে কোনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তাই তাঁরা বাধ্য হয়েই ‘শাস্তি’ দিয়েছেন।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে—চুরি আটকানো জরুরি, কিন্তু তার পদ্ধতিটাই বা কতটা সঠিক? আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কি ন্যায্যতা পেতে পারে? গণপিটুনির এই সংস্কৃতি কি রোখা সম্ভব, নাকি এটাও হয়ে উঠছে ‘নতুন আইন’?