পাঞ্জাবের ছোট্ট শহর মোগার নাম কয়েক বছর আগে খুব কম মানুষই জানতেন (Women’s World Cup)। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের মাঠে সেই মোগার মেয়ে হরমনপ্রীত কৌরের ঝড়ো ১৭১ রানের ইনিংস ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিল। ফাইনালে হারলেও সেই দিন থেকেই জন্ম হয়েছিল এক নতুন ক্রীড়ানায়িকার (Women’s World Cup)। লড়াই, পরিশ্রম আর অদম্য জেদের গল্পে তৈরি হয়েছিল তাঁর পথ। কোমরে ওড়না বেঁধে ছেলেদের সঙ্গে গলিতে ক্রিকেট খেলা যে মেয়ে আজ বিশ্ব ক্রিকেটের শিরোমণি— সেই মেয়েই হরমনপ্রীত।
আর আজ সেই অধ্যায়ের পরিণতি। ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। হরমনপ্রীতের হাতে উঠেছে বিশ্বকাপ ট্রফি (Women’s World Cup)। প্রথমবার মহিলা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত। মোগা শহরের নাম এখন ভারতের সঙ্গে সারা পৃথিবীতে উচ্চারিত হচ্ছে গর্বে।
এই দলের প্রতিটি ক্রিকেটারই যেন সংগ্রামের গল্প। কেউ পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্রিকেট বেছে নিয়েছেন, কেউ দৈনিক বাসে কয়েক ঘণ্টা ভ্রমণ করে প্র্যাকটিস করেছেন, কেউ আবার অভাবের সঙ্গে লড়তে লড়তেই টিম ইন্ডিয়ার জার্সি পেয়েছেন (Women’s World Cup)। একসময় যেখানে ঝুলন গোস্বামী, মিতালি রাজ ভারতীয় মেয়েদের ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে আজ সেই জায়গা আরও উঁচুতে তুলে দিলেন হরমনপ্রীত।
ম্যাচ শেষে আবেগে ভেসে গেলেন অধিনায়ক (Women’s World Cup)। বললেন, “এই সমর্থন আমাদের শক্তি। উত্থান-পতনের মাঝে দেশের মানুষ পাশে ছিলেন। বাবা, পরিবার, পুরো টিম— সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা এই মুহূর্তটার জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করেছি। এখন জিততেই থাকবে ভারত।”
ফাইনালের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত? চমক ছিল। ব্যাট হাতে দারুণ খেলা শেফালি বর্মাকে বোলিংয়ে আনার সিদ্ধান্ত যেন হরমনপ্রীতের মাস্টারস্ট্রোক। অধিনায়ক বললেন, “আজ শেফালির দিন ছিল। আমার মন বলেছিল, ও একটা ওভার পাবে।” তাঁর সেই বিশ্বাস মাঠে সোনা হয়ে ফিরল।
দেশজুড়ে উচ্ছ্বাস। সোশ্যাল মিডিয়া ভেসে যাচ্ছে অভিনন্দনে। ছোট ছোট মেয়েদের মুখে আজ একটাই নাম— “হ্যারি দিদি।” উঠে আসা ক্রিকেট প্রতিভাদের বাড়িতে এখন থেকে থাকবে হরমনপ্রীতের পোস্টার।
আজ শুধু জয়ের দিন নয়, বিশ্বাসের দিন। আজ থেকে দেশের প্রতিটি অভিভাবক কন্যাকে বলতে পারবেন— “দেখো, হরমনপ্রীতের মতো হও।” ভারত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন— এ শুধু ক্রিকেটের জয় নয়, কোটি মেয়ের স্বপ্নের জয়।












