২০২৫ সাল খেলাধুলার দুনিয়ায় ইতিহাসের বছর (Women’s World Cup)। বিশ্বজুড়ে বহু দল এবং অ্যাথলিট প্রথমবার স্বপ্ন ছুঁয়েছে। সেই তালিকায় নাম উঠল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলেরও। বৃহস্পতিবার রাতে নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে অবিশ্বাস্য এক ইতিহাস গড়ল ভারত। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অপরাজেয় অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে উঠল ভারতীয় মেয়েরা (Women’s World Cup)।
পনেরো ম্যাচ টানা জিতে সেমিফাইনালে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া (Women’s World Cup)। টস জিতে ব্যাট করে তারা তুলল ৩৩৮ রান। মহিলা ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে কোনও দল ৩৩৯ রান তাড়া করে জেতেনি। অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড ৩৩১— সেটিও মাসখানেক আগে ভারতের বিরুদ্ধেই। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের শুরুতে ভারতে আশঙ্কা, সংশয়, উত্তেজনা— সবই ছিল (Women’s World Cup)।
আরও চাপ বাড়ালেন শফালি ভার্মা ও স্মৃতি মন্ধানা। দ্বিতীয় ও দশম ওভারেই দুই ওপেনার ফিরলেন। মনে হচ্ছিল ইতিহাস আবারও অস্ট্রেলিয়ারই হবে (Women’s World Cup)। কিন্তু তখনই মাঠে নামলেন জেমিমাহ রদ্রিগেজ— ২৫ বছরের মুম্বইয়ের মেয়ে, যার ব্যাটেই বদলে গেল দেশের ভাগ্য। বিপদের মুহূর্তে পাশে পেলেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরকে। দু’জনে মিলে ১৬৭ রানের মহা পার্টনারশিপ। ২০১৭-র স্মৃতিকে তরতাজা করে আবারো ভারতের হৃদয় জিতে নিলেন হরমন, খেললেন ৮৮ বলে ৮৯ রানের ইনিংস।
তবে রাতটা ছিল একেবারেই জেমিমাহর (Women’s World Cup)। ১৪ বাউন্ডারিতে সাজানো ১২৭ অপরাজিত রানের অনন্য ইনিংস— সম্ভবত মহিলা ক্রিকেটের সেরা ছন্দময় প্রদর্শন। সোশ্যাল মিডিয়ার মিষ্টি হাসি, গিটার হাতে তাকেই দেখেছি বারবার। কিন্তু সবার সন্দেহ, সমালোচনা, ট্রোল— আজ সব স্তব্ধ। ব্যাটই দিল জবাব।
২০২২ সালে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েছিলেন (Women’s World Cup)। কষ্ট আর হতাশা বুকেই চেপে রেখেছিলেন তিনি। এ বারও ইংল্যান্ড ম্যাচে বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছে। সেই যন্ত্রণা আজ চোখের জল হয়ে গড়াল, ম্যাচজয়ের পর প্রেস কনফারেন্সে। জেমিমাহর গলায় আবেগ, “অনেকে বলেছিল পারব না। আমি তবু চুপ করে ছিলাম। আজ শুধু একটি লক্ষ্য ছিল— ভারতকে জেতাতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমি সেঞ্চুরির জন্য খেলিনি। আমি কোনও প্রমাণ দিতে নামিনি। আমার একটাই চিন্তা ছিল— টিমকে জেতানো। ভাবছিলাম, আগামী সকালে হাসি মুখে উঠতে চাই— কারণ ভারত ফাইনালে পৌঁছেছে।”
এক হাত তুলে তলোয়ারের মতো ব্যাট ধরেননি তিনি। শতরানের উদ্যাপন করেননি। কারণ তাঁর মতে, “উদ্যাপনের আসল মুহূর্ত তখনই, যখন স্কোরবোর্ডে লেখা থাকবে— INDIA WON।”
এখন ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন সূর্যোদয়। নতুন চ্যাম্পিয়ন আসছে— আর সেই মুকুট ছিনিয়ে আনার জন্য প্রস্তুত ভারতীয় মেয়েরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ফাইনাল এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার রাতের মতোই, রবিবারও কি ইতিহাস গড়বে ভারত? দেশের বুক আজ ভরসায় টইটম্বুর। নবি মুম্বইয়ের আকাশে একটাই স্বর— চলো মেয়েরা, এবার বিশ্ব জিতো!








