দীর্ঘ প্রতীক্ষা। অশেষ লড়াই। অবশেষে সেই দিন এল। যখন গোটা দেশ ডুবে গেল উৎসবের আবহে, সেই স্বপ্নপূরণের দিনটায় ইতিহাস লিখলেন ভারতের মেয়েরা। বিশ্বকাপের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে রূপকথার জয় তুলে নিলেন হরমনপ্রীত কৌরের সৈন্যরা। আর এই ঐতিহাসিক সাফল্যের কেন্দ্রে যিনি, তিনি দীপ্তি শর্মা (Deepti Sharma)। ব্যাট হাতে হাফ-সেঞ্চুরি এবং বল হাতে পাঁচ উইকেট— বিরল এক কীর্তি। এরপরই ‘প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট’ মুকুট উঠল তাঁর মাথায় (Deepti Sharma)।
ম্যাচ শেষে চোখ ভেজানো আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর আবেগের ভিড়ে দীপ্তির (Deepti Sharma) কণ্ঠে শোনা গেল বড় দাবি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের উদ্দেশে সরাসরি বার্তা তাঁর— “এবার আমরা আরও ম্যাচ চাই। এই জয় শুধু আমাদের নয়, নতুন প্রজন্মের মেয়েদের স্বপ্ন। তাঁদের বড় মঞ্চ দিন।”
২০১৭ সাল থেকে নারীদের ক্রিকেটের পরিবর্তনের পথচলা। দর্শকভর্তি গ্যালারি, ফ্যানদের আবেগ, সোশ্যাল মিডিয়া ঝড়— নারীদের ক্রিকেট আর পর্দার আড়ালের খেলা নয়। আর সেই স্বপ্নের পথ আরও মজবুত করতে চান দীপ্তি (Deepti Sharma)। তাঁর ভাষায়, “বিশ্বকাপ জেতার পর আরও অনেক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করি। সামনে আরও বড় সুযোগ চাই।” এই বিশ্বকাপজুড়ে দীপ্তির পরিসংখ্যান রূপকথাকেও হার মানায়। তিনটি হাফসেঞ্চুরি সহ মোট ২১৫ রান এবং ২২ উইকেট— টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। নকআউট ম্যাচে অর্ধশতক ও পাঁচ
উইকেট নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখলেন প্রথম ভারতীয় হিসেবে। ম্যাচ শেষে আবেগ সামলাতে না পেরে বলেন,“এই ট্রফি আমি আমার মা–বাবাকে উৎসর্গ করছি। যত লড়াই করেছি, তাঁদের আশীর্বাদেই।“
মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য এটি শুধু একটি ট্রফি নয়, এটি এক নতুন যুগের শুরু। প্রতিটি মেয়ের হাতে ব্যাট আর বল তুলে দেওয়ার অঙ্গীকার, স্বপ্নের সিঁড়ি। আজ হয়তো রোহিত শর্মাও গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে চোখ মুছেছেন— কারণ এই তো নয়া ভারত।
বিশ্বকাপের মুকুট মাথায় নিয়ে দীপ্তির স্পষ্ট বার্তা— “আমরা বারবার ফিরব। আরও বড় হব, আরও উন্নতি করব। শুধু সুযোগ দিন।”
দেশের প্রতিটি মেয়ের চোখে আজ সেই স্বপ্ন ঝিলিক দিচ্ছে। ক্রিকেট শুধু খেলা নয়— এটি তাঁদের পরিচয়, তাঁদের নতুন সকাল। এবং এই জয় বলছে… ভারত শুধু জেতেনি— ভারত বদলে দিয়েছে ইতিহাস।













