স্মার্টফোন আর শিশুর (Children) সম্পর্ক নিয়ে বাবা-মায়েদের মধ্যে সবসময়ই থাকে একরাশ দুশ্চিন্তা। ছোটো বাচ্চার হাতে মোবাইল মানেই যেন চোখের ক্ষতি, মনঃসংযোগে ঘাটতি, আর মানসিক বিকাশে বাধা—এই ভয় আমাদের প্রতিদিন তাড়া করে ফেরে। চিকিৎসকরাও বারবার সতর্ক করেছেন যে অনিয়ন্ত্রিত মোবাইল ব্যবহার শিশুর চোখের পাশাপাশি তার মস্তিষ্কের ওপরও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে (Children)। তাই অনেক অভিভাবকই সন্তানকে মোবাইল থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করেন।
তবে সময় বদলেছে। মোবাইল এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, হয়ে উঠতে পারে শিশুর শেখার সঙ্গীও—শুধু প্রয়োজন সঠিক ব্যবহার ও সময়ের নিয়ন্ত্রণ (Children)। ধরুন, আপনার সন্তান কোনো জটিল শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছে, যার ফলে সে বিছানায় শুয়ে থাকতে বাধ্য। খেলাধুলো বা বাইরের জগত তার কাছে তখন নিষিদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র গল্পের বই দিয়েই যদি তার সময় কাটানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে একঘেয়েমি ঘিরে ধরতে পারে মনকে। ঠিক তখনই চিকিৎসকরা বলেন, শিশুকে (Children) সামান্য সময়ের জন্য মোবাইল দেওয়া যেতে পারে—তবে শর্তসাপেক্ষে।
আপনি চাইলে তাকে শিক্ষামূলক কার্টুন দেখাতে পারেন, বা ভালো গান, ছড়া কিংবা গল্পের ভিডিও শুনিয়ে তার মন ভালো রাখতে পারেন (Children)। এমন কিছু অনলাইন কনটেন্ট বেছে নিতে হবে, যা শিশুর কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে, সতর্ক থাকুন! ভুল করেও শিশুকে সোশ্যাল মিডিয়া, শর্টস বা রিলস দেখাবেন না। এতে তার মনঃসংযোগ দুর্বল হতে পারে, এবং অল্প বয়সেই সে হয়ে উঠতে পারে অস্থির ও ধৈর্যহীন। এর পরিবর্তে তাকে দিন এমন কিছু যা ধৈর্য বাড়ায়, শেখায় নতুন কিছু তৈরি করতে (Children)। যেমন—ডুডল, পাজল, আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্ট ভিডিও ইত্যাদি।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যা থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখতে চাই, সেটার প্রতিই তাদের কৌতূহল বাড়ে (Children)। কাজেই আপনি যদি নিজে থেকেই শিশুর হাতে মোবাইল তুলে দেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, তবে সে তা আনন্দের সঙ্গেই গ্রহণ করবে। আপনি সময় বেঁধে দিন—যেমন দিনে ৩০ মিনিট। এতে সে শিখবে সময়ানুবর্তিতা, এবং এই শৃঙ্খলা তার ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক অভ্যাস হয়ে উঠতে পারে।
মোবাইল ব্যবহারের পর তাকে বোঝান, এখন সময় হয়েছে অন্য কিছু করার—খেলাধুলা, বই পড়া, বা রং-তুলি হাতে ছবি আঁকা। তাকে এমনভাবে মোটিভেট করুন যাতে সে নিজেই মোবাইল সরিয়ে এগিয়ে আসে অন্য কাজে। অনেক সময় আমরা শিশুর (Children) ওপর নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে চাই। তবে আজকের দিনে সে উপায় কার্যকর নয়। বরং তাকে বোঝান, যুক্তি দিন, ভালো-মন্দের পার্থক্য শেখান। দেখবেন, সে নিজের থেকেই আপনাকে বিশ্বাস করবে এবং নির্দিষ্ট সময় মেনে মোবাইল ব্যবহার করবে।
এইভাবেই শিশুর জন্য স্মার্টফোন হতে পারে ক্ষতির নয়, বরং জ্ঞানের দ্বার।