আরিয়ান খান নামের এক যুবককে বিয়ে করার আশায় সোদপুরের এক তরুণী দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে ওই তরুণী ডোমজুড়ের একটি ফ্ল্যাটে এসে আরিয়ানের সঙ্গে একসঙ্গে থাকত। পরে আরিয়ানের মা শ্বেতা খান (Sweta Khan), যিনি ‘ফুলটুসি’ নামেও পরিচিত, ওই তরুণীকে ডেকে বলেন, তিনি যেন বাঁকড়ার ফকিরপাড়ায় তাঁদের ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানেই ফুলটুসি এবং তাঁর ছেলে আরিয়ান থাকতেন।
তরুণী যখন ওই ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন, তখন ফুলটুসি (Sweta Khan) জানান, তাঁকে বাড়ির কাজের লোকের মতো কাজ করতে হবে। সঙ্গে ফুলটুসির তিন বছরের মেয়েকে দেখাশোনা করার দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। ফুলটুসি প্রতিশ্রুতি দেন, যদি তরুণী তার আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়, তাহলে তিনি (Sweta Khan) নিজে তাঁর ছেলে আরিয়ানের সঙ্গে সেই তরুণীর বিয়ে দেবেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীরও একটি ছোট মেয়ে আছে, যাকে মাঝে মাঝে সে সোদপুরে গিয়ে দেখে আসতেন। তবে ফুলটুসির দাবি, তরুণী তাঁর তিন বছরের শিশুকন্যাকে ঠিকমতো দেখভাল করছিলেন না, ঘরের কাজেও মন দিচ্ছিলেন না এবং আগের পক্ষের স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার ব্যাপারেও কোনও তৎপরতা দেখাচ্ছিলেন না।
এই কারণেই ফুলটুসি ওই তরুণীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালাতে শুরু করেন বলে পুলিশের জেরায় স্বীকার করেছেন তিনি (Sweta Khan)। তদন্তে উঠে এসেছে, তরুণী প্রথম থেকেই বলেছিলেন, তিনি নিজেই তাঁর মেয়েকে সামলাতে হিমশিম খান, তাই অন্যের সন্তানকে দেখাশোনা করাও তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
এর পর ফুলটুসি (Sweta Khan) আরও এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেন—তিনি চেয়েছিলেন, ওই তরুণী যেন বাড়ির কাজ ও শিশুর দেখাশোনার পাশাপাশি একটি বার-এ নাচগানের কাজও করেন, যাতে তাঁদের সংসারে বাড়তি রোজগার আসে। কিন্তু তরুণী সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ফুলটুসির রাগ আরও বেড়ে যায় এবং অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে।
এই গোটা ঘটনায় তরুণীর মানসিক ও শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। বর্তমানে পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এবং ফুলটুসির বিরুদ্ধে নির্যাতনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।