ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু নদী জলচুক্তি (Indus Water Treaty) স্থগিত করার সিদ্ধান্তে কাঁপছে ইসলামাবাদ। পাক পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটেও শুরু হয়েছে হাহাকার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (PTI)-এর প্রবীণ নেতা ও সেনেটর সৈয়দ আলি জাফর বলেই দিলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত (Indus Water Treaty) আসলে এক “জল বোমা”।
শুক্রবার পাক সেনেটে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আমরা না খেয়ে মরব যদি এখনই এই জল (Indus Water Treaty) সংকটের সমাধান না হয়। আমাদের ৯০% কৃষিকাজ সিন্ধু বেসিনের জলের ওপর নির্ভরশীল। এটা আমাদের প্রাণরেখা। এর উপরেই আমাদের বিদ্যুৎ প্রকল্প, খাদ্য নিরাপত্তা, পুরো অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে।” তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “যদি এই সংকটের মোকাবিলা না করা হয়, তাহলে গণহারে মৃত্যু অনিবার্য!”
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হওয়ার পরই ভারতের পাল্টা কূটনৈতিক ধাক্কা আসে। ভারত জানায়, পাকিস্তান যতদিন না জঙ্গি মদত বন্ধ করবে, ততদিন সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সেই পুরোনো বাণী আবার উঠে আসে— “রক্ত আর জল একসাথে চলতে পারে না।” আর এভাবেই ভারত একটি বহুবছরের জলচুক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতকে চুক্তি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু দিল্লি অনড়। ভারত ইতিমধ্যেই সাতটি কূটনৈতিক দল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছে যাতে পাকিস্তান ‘ভিক্টিম’ বা ‘নিচু riparian দেশ’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে না পারে। এই অপারেশন সিঁদুরের পরবর্তীতে ভারতের অবস্থান সঠিকভাবে তুলে ধরতে এই কূটনৈতিক মহড়া।
প্রসঙ্গত, সিন্ধু জলচুক্তি ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হলেও, ইসলামাবাদ এতদিন ধরে এটি নিজেদের অধিকার হিসেবে চালিয়ে আসছিল। কিন্তু এবার ভারত কৌশলগতভাবে সেই চুক্তিকে অস্ত্র করে ফেলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও এখনই ভারত বড় ধরনের জল প্রবাহ থামাতে পারবে না অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে, কিন্তু এর মধ্যেই পাকিস্তান দিশেহারা।