ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) সঙ্গে একান্ত বৈঠক পাকিস্তানের পক্ষে অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। কারণ, এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।
এই বৈঠক ছিল অত্যন্ত ব্যতিক্রমী, কারণ সচরাচর কোনও দেশের সেনাপ্রধানকে একা ডেকে বসে না কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট (Donald Trump)। এতে পরিষ্কার হয়ে যায়, পাকিস্তানে প্রকৃত ক্ষমতা বেসামরিক সরকারের হাতে নয়, বরং সেনাবাহিনীর হাতে।
রাজেশ সিং বলেন, “এটা আমার কাছে খুবই অদ্ভুত লেগেছে। একটা দেশের পক্ষে এটা খুবই লজ্জার বিষয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সেনাপ্রধান রাষ্ট্রপ্রধানের (Donald Trump) সঙ্গে বৈঠক করেন। এটা অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং চিন্তার বিষয়।”
এই বৈঠকে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিকও উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু বেসামরিক সরকার বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনও প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না।
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গিয়েছে, আসিম মুনির ট্রাম্পকে (Donald Trump) নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ করেন। তাঁর দাবি ছিল, ট্রাম্পই (Donald Trump) ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকিয়েছেন।
যদিও ভারত সবসময়ই বলে এসেছে, যুদ্ধবিরতি হয়েছিল দু’দেশের সেনাপ্রধানদের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে—কোনও তৃতীয় পক্ষ বা বিদেশি হস্তক্ষেপ ছিল না।
এই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Donald Trump) ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে ৩৫ মিনিট কথা বলেন এবং স্পষ্ট করে দেন যে, ৭-১০ মে সীমান্ত উত্তেজনার পর যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত একান্তই ভারত ও পাকিস্তান সেনার নিজস্ব সিদ্ধান্ত, কোনও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা ছিল না।
প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ সিং আরও বলেন, “পাকিস্তানে এই সেনাপ্রধান যে বিনিয়োগ সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলে বসেন এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তও নেন, এটা খুবই অদ্ভুত। এমন কাঠামো সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক যেখানে সেনাবাহিনীই সম্পদের উপরে প্রথম অধিকার দাবি করে।”
তিনি এও বলেন যে, ভারতকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি স্থায়ী এবং দৃঢ় প্রতিরোধের বার্তা বজায় রাখতে হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, পহেলগাম জঙ্গি হামলার পর ভারতের কড়া কূটনৈতিক অবস্থান, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখা এবং চারদিনের সামরিক সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে ফের অবনতি হয়েছে।
ভারত বরাবরই বলছে, সন্ত্রাস ও শান্তি আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। পাকিস্তান নিজ দেশে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে মদত দেয় এবং সেখান থেকে পরিচালিত হয় সীমান্ত পার হয়ে হামলা—এই বিষয়টি বারবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরেছে নয়াদিল্লি।